আমরা সকলেই চাই যান্ত্রিক কোলাহলের বাইরে গিয়ে প্রাকৃতিক কোন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ঘুরে আসতে। তাদের জন্য এই ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর হতে পারে খুব সুন্দর একটি ঠিকানা। যেখানে গেলে আপনি প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার অপার সুযোগ পাবেন।
ভোলাগঞ্জ (Bholaganj) সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানিগঞ্জের একটি পাথর কোয়ারি। ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর বা নামে এটি পরিচিত । প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে বর্তামানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান উঠেছে। একপাশে মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়, সেখান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঝর্ণা, আর অন্যপাশে পাথুরে নদী এই জায়গাটির সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মেঘালয়ের পাহাড়ি ঝর্ণাগুলো থেকে যে নদীটির উৎপত্তি হয়ে ভোলাগঞ্জে উপর দিয়ে বয়ে গেছে তার নাম ধলাই নদ। পাহাড় থেকে ঝর্ণার পানির স্রোতে নদী বেয়ে নেমে আসে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর। ধলাই নদের উৎসমুখের এই জায়গাটির নাম ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট। এর কাছাকাছি আরো দুইটি সুন্দর জায়গা রয়েছে উৎমাছড়া ও তুরুংছড়া নামে।
উপযুক্ত সময়
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরযাবার সবচেয়ে ভাল সময় হচ্ছে বর্ষাকাল ও তার পরবর্তী কিছু মাস। অর্থাৎ জুন থেকে ডিসেম্বর মাসের যেকোন সময় ঘুরে আসতে পারেন ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর থেকে। অন্যসময় গেলে পাথরময় সৌন্দর্য দেখতে পেলেও নদীতে পানি প্রবাহ তুলনামুলক কম পরিমাণে থাকে।
কিভাবে যাবেন
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে যেতে হলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে সিলেট আসতে হবে। ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত বিরতিতে সিলেটের বাস ছাড়ে। ইউনিক, শ্যামলী, গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এনা পরিবহন ও লন্ডন এক্সপ্রেস সহ দেশের সব বড় কোম্পানির বাস আছে সিলেট রুটে। এই রুটে নন এসি বাসের ভাড়া ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। এসি বাস এর ভাড়া ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা। বাসে ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছাতে সময় লাগে সাড়ে ৫ থেকে ৭ ঘন্টা।
চট্টগ্রাম থেকে সিলেট
চট্টগ্রাম থেকে সৌদিয়া, বিআরটিসি ও এনা পরিবহণের সিলেট রুটে বাস রয়েছে। ভাড়া ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮:১৫ মিনিটে পাহাড়িকা এবং শনিবার বাদে প্রতিদিন রাত ৯:৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া সিটের শ্রেণীভেদে ১৪৫ থেকে ১২০০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট যেতে সময় লাগে ৯ থেকে ১১ ঘন্টা।
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ
সিলেটের আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর যাওয়ার সিএনজি পাবেন। লোকাল সিএনজিতে জনপ্রতি ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা নিবে। চাইলে সিএনজি রিজার্ভও নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আসা যাওয়ায় ভাড়া পড়বে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। এক সিএনজিতে ৫ জন বসতে পারবেন। আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ যেতে কমবেশি দেড় ঘন্টার মতো সময় লাগে। ভোলাগঞ্জ বাজারে নেমে দশ নম্বর নৌকা ঘাটে যেতে হবে। নৌকা ঘাট থেকে যাওয়ার নৌকা পাওয়া যায়। আসা যাওয়ার ভাড়া ৮০০ টাকা। এক নৌকায় ১০ জন বসা যায়। এক্ষেত্রে নিজেরা গ্রুপ করে গেলে খরচ কমে আসে।
কোথায় খাবেন
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কিংবা ১০ নং ঘাটে ভালমানের খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট নেই। ভাত মাছ ও দেশীয় খাবার খাওয়ার মত সাধারন মানের কিছু হোটেল আছে। যাবার রাস্তায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে দেশবন্ধু রেস্টুরেন্ট, আলম হোটেল এবং টুকের বাজারে নবীন রেস্তোরাঁ, মায়া রেস্টুরেন্ট সহ কয়েকটি মাঝারি মানের খাবার হোটেল আছে। ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর উদ্দেশ্যে রওনা হবার আগে সিলেট থেকে নাস্তা করে নিলে সারাদিন ঘুরে সিলেটে ফিরে এসে রাতের খাবার খেতে পারবেন। তবে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেলেই একমাত্র ভরসা।
কোথায় খাবেন
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কিংবা ১০ নং ঘাটে ভালমানের খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট নেই। ভাত মাছ ও দেশীয় খাবার খাওয়ার মত সাধারন মানের কিছু হোটেল আছে। ভোলাগঞ্জ যাবার রাস্তায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে দেশবন্ধু রেস্টুরেন্ট, আলম হোটেল এবং টুকের বাজারে নবীন রেস্তোরাঁ, মায়া রেস্টুরেন্ট সহ কয়েকটি মাঝারি মানের খাবার হোটেল আছে। ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর উদ্দেশ্যে রওনা হবার আগে সিলেট থেকে নাস্তা করে নিলে সারাদিন ঘুরে সিলেটে ফিরে এসে রাতের খাবার খেতে পারবেন। তবে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেলেই একমাত্র ভরসা।
ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
- চেষ্টা করবেন ঘুরে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে, যাতে সন্ধ্যা না হয়ে যায়।
- ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কতক্ষণ থাকবেন সেটা নৌকার মাঝিকে আগেই জানিয়ে রাখুন। আপনাদের ইচ্ছে মত সময় অবস্থান করতে পারবেন।
- সীমান্তবর্তী জায়গা, তাই সাবধানে থাকবেন।
- নদী পথে ভোলাগঞ্জ শুধু মাত্র বর্ষাকালে যাওয়া যায়।
- খেতে চাইলে সেখানের স্থানীয় হোটেল গুলো থেকেই খেতে হবে।
- বর্ষাকালে নদীর পানিতে অনেক স্রোত থাকে, সাঁতার না জানলে বেশি পানিতে নামা দরকার নাই।
- যানবাহন ভাড়া করার সময় অবশ্যই দরদাম করে নিবেন।
- কম খরচে ঘুরতে চাইলে গ্রুপ করে ঘুরতে পারেন।
- একদিনে, উৎমাছড়া ও তুরংছড়া ঘুরতে চাইলে অবশ্যই খুব সকাল সকাল রওয়ানা হতে হবে।
- চাইলে সিলেটের আম্বরখানা থেকে সিএনজি যাওয়া আসা এবং সেখানের স্পট গুলোতে ঘুরার জন্যে সারা
- দিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন। এইক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি হতে পারে।
শেষ কথা
আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে দেখেছেন। তারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন। তাহলে অবশ্যই অন্যকেও এখান থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিবেন। ধন্যবাদ!