ফয়েজ লেক l ফয়েজ লেক কোথায় অবস্থিত?

ফয়েজ লেক
ফয়েজ লেক

ফয়েজ লেক ( Foys Lake ) চট্রগ্রামে অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ সাথে বিনোদন বলাইয়ায় কেন্দ্রও বটে। ফয়েজ লেক আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ১৯২৪ সালে খনন করা হয়। সেসময় ফয়েজ লেক পাহাড়তলী লেক নামেই সবার কাছে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশ প্রকৌশলী ফয়-এর (Foy) যিনি ফয়েজ লেকের নকশা তৈরি করেছিলেন তার নামানুসারে ফয়েজ লেক ( Foys Lake ) নামকরন করা হয়।

ফয়েজ লেক

ফয়েজ লেক নির্মানের মূল উদ্দেশ্য ছিলো রেল কলোনিতে বসবাসকারী লোকদের কাছে  সহজে পানি সরবরাহ করা ।  আনুমানিক ৩৩৬ একর জমির উপর নির্মিত ফয়েজ লেকটি পাহাড়ের এক শীর্ষপ্রান্ত থেকে আরেক শীর্ষপ্রান্তের একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে এটিকে সৃষ্ট করা হয়। চট্রগ্রাম শহরের সবথেকে উঁচু পাহাড় বাটালি এই লেকের পাশেই অবস্থিত।
বাংলাদেশের বৃহত্তম নির্মাণ কোম্পানি কনকর্ড , ফয়েজ লেকের চারপাশে ফয়েজ  লেক কনকর্ড নামে একটি বিনোদন পার্ক তৈরি করেছে যেখানে অতিথিরা ডাইনিং, বোটিং, হাইকিং এবং লেকসাইড পারফরম্যান্স উপভোগ করতে পারেন। বর্তমানে এখানে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির অতিথি পাখি এবং হরিণ দেখার সুব্যবস্থা রয়েছে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কাছেই ফয়েজ লেক অবস্থিত। এছাড়াও পর্যটকরা যেঁ ফয়েজ লেকে  কটেজ ভাড়া করে থাকতে  পারেন সেই সুব্যবস্থাও রয়েছে। ফয়েজ লেকের মনোরম পরিবেশ এবং অপরূপ সৌন্দর্য প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

ফয়েজ লেকের টিকেট মূল্য

ফয়েজ লেকে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি খরচ করতে হবে ৩০০ টাকা। এছাড়া আপনি যদি সকল রাইড + একটি আইসক্রিম ফ্রি পেতে চান তাহলে ফয়েজ লেকের  প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৩৫০ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। সী ওয়ার্ল্ডে প্রবেশের জন্য মোট ৪০০ , ৫০০ , এবং ৬০০ টাকার তিনটি প্যাকেজ রয়েছে। এই ৩ টি প্যাকেজ থেকে আপনি আপনার পছন্দ মত প্যাকেজ গ্রহন করে সী ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করতে পারবেন।

ফয়েজ লেকে প্রবেশের সময়সূচী

ফয়েস লেক প্রতিদিন সকাল ১০:৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে শুক্রবার ও শনিবার ফয়েস লেক সন্ধ্যা ৭ টায় বন্ধ করা হয়। আপনি যদি খুবই ভালো ভাবে ফয়েজ লেক ( Foys Lake ) পরিদর্শন করতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে সকাল বেলা ফয়েজ লেকে যাওয়া। যাতে করে আপনি সকল স্থান খুব সুন্দর ভাবে ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন। তাই সময় হাতে নিয়ে গেলে ভালো হয়।

ফয়েজ লেকে যাওয়ার উপায়

আপনি চাইলে বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ফয়েজ লেকে আসতে পারেন। প্রথমে আপনাকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসতে হবে আর পরে বাস , রিক্সা , বা সি এন জি তে করে ফয়েজ লেকে যেতে পারবেন।
আপনি যদি চট্রগ্রাম শহরের অধিবাসী হয়ে থাকেন তাহলে চট্রগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকেই বাস , রিক্সা , বা সি এন জি তে করে ফয়েজ লেকে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

ফয়েস লেক ভ্রমনের পর আপনি নিশ্চয় ভাবছেন কোথাও রাত্রি যাপন করব। আপনি যদি চট্রগ্রাম শহরের বাইরে থেকে এসে থাকেন তাহলে দুশ্চিন্তার কোনো কারন নেই। কারন আপনাদের জন্যই ফয়েস লেক কর্তৃপক্ষ বেশকিছু বিলাসবহুল রিসোর্ট ও কটেজ নির্মান করে রেখেছে।যেখানে আপনি চাইলেই খুব অল্প টাকায় রাত্রি যাপন করতে পারেন। যেখানে পাহাড় কিংবা হ্রদমুখী কটেজ কিংবা রিসোর্টে থাকতে হলে ৪০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা খরচ করতে হবে।
এছাড়া আপনি যদি নববিবাহিত দম্পতি হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের মুহূর্ত গুলো আরো ভালো ভাবে উপভোগ করার জন্য হানিমুন নামের আরো একটি স্পেশাল কটেজের ব্যবস্থা করে রেখেছে। এছাড়াও বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান এবং ইভেন্টগুলো সেখানে আপনারা করতে পারেন।
এছাড়াও চট্রগ্রাম শহরে বিভিন্ন বাজেটের হোটেল , রিসোর্ট , কটেজ রয়েছে। আপনারা চাইলে সেখানেও রাত্রী যাপন করতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

ফয়েজ লেকের আসে পাশেই বিভিন্ন খাবারের হোটেল আছে চাইলে সেখান থেকে খাবার খেতে পারেন। যেখানে আপনি সকাল দুপুর এবং রাতের খাবার পেয়ে যাবেন খুব অল্প টাকায় ভালো মানের খাবার।

যোগাযোগ

চট্রগ্রাম অফিসঃ 01913-531480 , 031-2566080 , 01913-531554
ঢাকা অফিসঃ 9896482 , 01913-531386 , 8833786

শেষ কথা

সময়ের সাথে সাথে হোটেল, রিসোর্ট, গাড়ি ভাড়া এবং অন্যান্য পরিষেবার মূল্য পরিবর্তনের কারণে তথ্য সঠিক নাও হতে পারে। অতএব, ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে অনুগ্রহ করে সাম্প্রতিক ভাড়া এবং খরচের তথ্য সম্পর্কে সচেতন হোন। ধনবাদ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *