টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। প্রায় ১২৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এ টাঙ্গুয়ার হাওর। স্থানীয় লোকজনের কাছে টাঙ্গুয়ার হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান হিসাবে পরিচয়, প্রথমটি সুন্দরবন।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কয়েকটি বিশাল বিশাল হাওর রয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওর, হাকালুকি, কাওয়া দিঘি হাওর, ছাইয়ার হাওর, টল্লার হাওর, নলুয়ার হাওর, পাছশোল হাওর, মইয়ার হাওর, মকর হাওর, মাহমুদপুর হাওর, রায়ের গাওন হাওর, সুরমা বাওলার হাওর। এর মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর। সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হাওরের মোট আয়তন ৬৯১২ একর। তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০,০০০ একর পর্যন্ত হতে পারে।
টাঙ্গুয়ার হাওর এর সাথে প্রায় ৩০টি ঝরনা এসে সরাসরি মিশেছে ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই । সারিসারি হিজল-করচশোভিত, পাখিদের কলকাকলি সদা মুখরিত টাঙ্গুয়ার হাওর। এখানে মাছ, পাখি এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর এক বিশাল অভয়াশ্রম হয়ে থাকে। প্রায় ১২ প্রজাতির ব্যাঙ, ১৪০ প্রজাতির মাছ, এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। শীতকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বহির্বিশ্ব থেকে এই টাঙ্গুয়ার হাওর এ প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে। জীববৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের কারণে টাঙ্গুয়ার হাওর এর সুনাম শুধু সুনামগঞ্জ বা বাংলাদেশে নয়, বাইরেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ মিঠা পানির এ হাওরকে ২০০০ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সুন্দরবনকে ধরা হয় প্রথম। ইরানের রামসার অঞ্চলে প্রথম জলাভূমি শনাক্ত করার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখান থেকেই এই নামটি এসেছে।
হাওর কি?
হাওর বা হাওড় হল সাগরসদৃশ পানির বিস্তৃত প্রান্তর। প্রচলিত অর্থে হাওর হল বন্যা প্রতিরোধের জন্য নদীতীরে নির্মিত মাটির বাঁধের মধ্যে প্রায় গোলাকৃতি নিম্নভূমি বা জলাভূমি। তবে হাওর সব সময় নদীতীরবর্তী নির্মিত বাঁধের মধ্যে না-ও থাকতে পারে। হাওরের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল, প্রতি বছরই মৌসুমী বর্ষায় বা স্বাভাবিক বন্যায় হাওর প্লাবিত হয়, বছরের কয়েক মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং বর্ষা শেষে হাওরের গভীরে পানিতে নিমজ্জিত কিছু স্থায়ী বিল জেগে ওঠে। গ্রীষ্মকালে হাওরকে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয়, তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি থাকে এবং তাতে মাছও আটকে থাকে।
টাঙ্গুয়ার হাওর গুরুত্ব:
- ভূ টেবিল সম্পূরণ
- জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন
- পাখি আশ্রয়স্থল
- বাস্তব্যবিদ্যা
- পাখি আশ্রয়স্থল
- পলল এবং পুষ্টির স্মৃতিশক্তি ও রপ্তানি
- উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতের শেষ আশ্রয়
- পরিযায়ী পাখি
টাঙ্গুয়ার হাওর কিভাবে যাবেন?
টাঙ্গুয়ার হাওর এ কোথায় থাকবেন ?
কোথায় খাবেন?
যে বিষয়ে বিরত থাকবেন :
- ময়লা রাখার জন্য নিজেদের কাছে একটি পলিব্যাগ রাখুন, পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিনে ময়লা ফেলুন।
- হাওরে, পাহাড়ে অথবা নদীতে কোনোক্রমেই চিপস, সিগারেট, বিস্কিটের প্যকেট অথবা অন্য যেকোনো ধরনের ময়লা ফেলবেন না।
- ময়লা রাখার জন্য নিজেদের কাছে একটি পলিব্যাগ রাখুন, পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিনে ময়লা ফেলুন।
- তাহিরপুর, টেকেরঘাট ও বারেকের টিলার মানুষগুলো যথেষ্ট সহজ-সরল, এঁদের সঙ্গে দয়া করে ছলচাতুরী করবেন না।
- অনেকেই সেখানে নেশা করে এবং সেই বোতলগুলো পানিতে নিক্ষেপ করে। বিষয়টা প্রচণ্ড দুঃখজনক। দয়া করে এ ধরনের জঘন্য অপকর্ম হতে নিজে বিরত থাকবেন এবং অন্যকেও সচেতন করার চেষ্টা করবেন।