কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

কিসমিসের অপকারিতা

শুকনা আঙুর কে কিসমিস বলা হয়। বর্তমান সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আঙ্গুর শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। রান্নাঘরে বিভিন্ন ধরনের রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিতে কিসমিস ব্যবহার করা হয় এছাড়াও মানুষের শরীরে বিভিন্ন প্রয়োজনে কিসমিস খাওয়া হয়। মানুষের কিসমিসের ব্যাপক উপকারিতা রয়েছে। এটি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়া হয়। তাই আমরা আজকে আপনাদের উদ্দেশ্যে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা এই প্রতিবেদনের আলোকে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে আজকের এই প্রতিবেদনটিতে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তথ্যগুলো তুলে ধরেছি। তাই আশা করা যায় আমাদের আজকের এই কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কিত তথ্যগুলো আপনাদের সকলের উপকারে আসবে।

রান্নাঘরে বিভিন্ন রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য কিসমিস ব্যবহার করা হয়। কিসমিস সাধারণত শুকনো আঙ্গুর কে বলা হয়। অর্থাৎ আঙ্গুর শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। বর্তমান সময়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ব্যাপক পরিমাণে কিসমিস উৎপাদন করা হয়। সেই সাথে বিশ্বের প্রতিটি দেশের মানুষের মাঝে কিসমিসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে কেননা অনেকে ডায়েট কিংবা শরীরের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় কিসমিস প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকেন। কেননা প্রাচীনকাল থেকে কিসমিস শরীরের শক্তি ও ক্যালরি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আছে। তাইতো অধিকাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত নিয়ম করে কিসমিস খেয়ে থাকেন। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অতিথি আপ্যায়নের জন্য যে সমস্ত খাবার রান্না করে থাকি এছাড়াও কোন উৎসব কিংবা বিশেষ দিন উপলক্ষে যে খাবার গুলো রান্না করা হয় সেগুলোতে কিসমিস ব্যবহার করা হয়। কিসমিস মূলত খাবারের স্বাদ ও সৌন্দর্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কিসমিস এর উপকারিতা কি কি ?

কিসমিসের রয়েছে নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নেই কিসমিস এর উপকারিতা :

রক্তশূন্যতা দূর করে

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লৌহ যা লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত কিসমিস খেলে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি পায়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনে। তবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা কিসমিস খাওয়াকালীন ঔষধ বন্ধ করবেন না।

হজম শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

নিয়মিত সকালে ভেজানো কিসমিস খেলে হজম শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। কিশমিশে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সকল ধরনের রোগ থেকে শরীরকে দূরে রাখে।

জীবাণু দূর করে

শরীরকে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে দূরে রাখার জন্য প্রতিদিন এক মুঠো কিসমিস খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে রক্ত পরিষ্কার থাকবে এবং শরীর বিষমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

যারা অনেকদিন যাবত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন এবং কোন ঔষধ ব্যবহারে ভালো ফল পাচ্ছেন না তারা প্রতিদিন সকালে ভেজানো কিসমিস খান। যাদের অনেকদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে আশা করি তারাও ভালো ফল পাবেন।

ধীরে ধীরে ওজন বাড়ায়

যাদের ওজন কিছুতেই বৃদ্ধি পায় না এবং প্রয়োজনের তুলনায় ওজন অনেক কম তারা প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে খালি পেটে কিসমিস খান। এতে করে ধীরে ধীরে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

কিসমিসে বিদ্যমান ক্যাটেচিন উপাদান ফ্রি র‍্যাডিকলগুলো এর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লড়াই করতে পারে। ফলে ক্যান্সারের জীবাণু ধীরে ধীরে মরে যায় এবং মেটাস্টাসিসেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস অক্সিডেটিভ রোধ করে এবং ইমিউন সিস্টেম স্থিতিশীল এবং ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।

হাড় মজবুত করে

কিসমিসের বিদ্যমান ক্যালসিয়াম এবং বোরন হাড় ও জয়েন্ট মজবুত রাখতে সাহায্য করে।

ঘুমের সমস্যা দূর করে

কিসমিস খেলে মানসিক অবসাদ দূর হয় এবং রাতে ঘুম ভালো হয় বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা

সাধারণত পরিমিত পরিবারে কিসমিস খেলে স্বাস্থ্যের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তবে প্রতিদিন অধিক মাত্র কিসমিস সেবনের ফলে শরীরের কিছু ক্ষতি হতে পারে। চলুন জেনে নেই কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা গুলো কি কি?

  • ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়তে পারে
  • এলার্জিজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে
  • পরিমাণের বেশি কিসমিস খেলে হজমে ব্যাঘাত, পেটে ব্যথা, অম্বলের সমস্যা তৈরি হতে পারে
  • উচ্চ রক্তচাপ গ্রস্থ ব্যক্তিদের সপ্তাহে এক থেকে দুই দিনের বেশি কিসমিস খাওয়া উচিত নয়
  • কিসমিস ওজন বৃদ্ধি করে। যাদের ওজন অনেক কম তাদের জন্য এটি উপকারী হলেও যাদের ওজন অতিরিক্ত তারা কিসমিস থেকে দূরে থাকুন।
  • অধিক পরিমাণে কিসমিস খেলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে
  • অধিক সেবনে বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হয়।

শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়

  • শুকনো কিসমিসের রয়েছে নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা। রোদের মাধ্যমে অথেনটিক উপায়ে যেসব কিসমিস তৈরি করা হয় সেগুলো হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। চলুন এক নজরে দেখে আসি শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়?
  • দেহে দ্রুত গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে শক্তি উৎপাদিত হয়
  • শুকনো কিসমিস দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো কাজ করে, যাদের চোখে ছানি পড়েছে তাদের জন্য শুকনো কিসমিস খুবই ভালো
  • যাদের রক্তের সমস্যার কারণে চর্ম রোগ, হৃদরোগ ইত্যাদি হয়েছে তাদের রক্তের এসিডিটি দূর করার জন্য কিসমিস খেতে হবে
  • কিশমিশে বিদ্যমান অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরি উপাদান শরীরে ঢুকে পড়া যে কোন জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে
  • বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে
  • লিভারে জমাকৃত কোলেস্টেরল দূর করতে কিসমিস খান।

উপসংহার

যারা কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছিলেন, আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি তারা উপকৃত হয়েছেন। কিসমিস খাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যেসব নিয়ম উল্লেখ করেছি সেগুলো মেনে চললে আশা করি আপনারা ভাল ফলাফল পাবেন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *